শেরপুরে মাজারের বটগাছ থেকে বের হচ্ছে অলৌকিক ধোয়া, প্রতিদিনই বাড়ছে উৎসুক মানুষের ভিড়
বগুড়া প্রতিনিধি : শেরপুরে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক সংলগ্ন উপজেলার শেরুয়া গড়েরবাড়ি গ্রাম। ওই গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশেই হযরত খোদাই শাহ (রহঃ) এর মাজার। সেখানে একটি প্রাচীন বটগাছ রয়েছে। মাস তিনেক আগে ঝড়ে সেই গাছটি উপড়ে পড়ে। কিন্তু এই মরা গাছটির গোঁড়া ও ডাল থেকে অলৌকিকভাবে ধোয়া বের হচ্ছে বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসী। গত সোমবার (২২অক্টোবর) সকাল থেকেই প্রতিদিন শতশত উৎসুক মানুষ স্থানটি দেখতে ভিড় করছে। এছাড়া ঘটনাটি অলৌকিক নাকি লৌকিক এনিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। পাশাপাশি প্রতিদিনই বাড়ছে উৎসুক মানুষের ভিড়। এদিকে এই ঘটনার খবর পেয়ে এলাকার সাধু-সন্ন্যাসী, মাজার ভক্তরা স্থানটিতে ওপরে সামিয়ানা ও মাটিতে লাল সালু কাপড় বিছিয়ে আগরবাড়ি ও মোমবাতি জ্বালিয়ে জিকির ও মিলাদ-মাহফিল করছেন। আবু হানিফ, লিটন ও হাফিজুরসহ একাধিক ভক্তের দাবি, উক্ত স্থানে আল্লাহ একজন ওলির কবর রয়েছে। এইসব তাঁরই খেলা। দয়াল আমাদের বুঝার জন্য এই অলৌকিক ঘটনা দেখাচ্ছেন। অত্র খোদাই শাহ (রহঃ) এর মাজার ও পীরপাল সম্পদ রক্ষার দায়িত্বে থাকা মোতাওয়াল্লি ও শেরপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব আব্দুস সাত্তার জানান, দীর্ঘদিন থেকেই খোদাই শাহ্ (রহঃ) এর মাজার ও পীরপাল কমপ্লেক্সে রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছেন। এখানে নিয়মিতভাবে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তিনি। তবে মাজার সংলগ্ন প্রাচীন এই বটগাছ নিয়ে অনেক কল্পকাহিনী রয়েছে। তাই মাজার সংস্কারের জন্য একাধিকবার গাছটি বিক্রির উদ্যোগ নেয়া হয়। বাজারমূল্যে টাকা নিয়ে একাধিক ক্রেতার কাছে বিক্রিও করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে ওইসব ক্রেতারা গাছটি কাটতে ভয় পান। অদৃশ্য এই ভয়ের কারণে গাছ না কেটেই ক্রেতারা টাকা ফেরত নিয়ে চলে যাওয়ায় প্রাচীণ এই বটগাছটি বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। তবে তিন-চার মাস আগে এমনিতেই ঝড়ের কারণে মাটিতে উপড়ে পড়েছে। এখন দেখছি গাছটির গোঁড়ায় এবং ডাল দিয়ে সব সময় অলৌকিকভাবে ধোয়া বের হচ্ছে। কি কারণে এমনটি হতে পারে তা তিনি বুঝতে পারছেন না জানান মাজারের মোতাওয়াল্লি আব্দুস সাত্তার। শাহবন্দেগী ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের মেম্বার রেজাউল করিম রেজা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এই খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিলাম। গাছ থেকে ধোয়া বের হওয়া দেখে আমারও কেন জানি মনে হচ্ছে-এটি একটি অলৌকিক ঘটনা হতে পারে। পীর-দরবেশের খেলা বলে তিনি মন্তব্য করেন। তবে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বনবিভাগের শেরপুর ফরেস্ট রেঞ্জের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আয়নাল হক বলেন, গাছটির গোঁড়ায় মাটির নিচে গ্যাস জাতীয় কোন কিছু আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। এছাড়া দীর্ঘদিন থেকে গাছটি রোদে শুকিয়ে যাওয়ার পর কয়েকদিন আগে বৃষ্টিপাত হয়। আর এসব কারণে এমনটি হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।